সর্বশেষ

6/recent/ticker-posts

মুন্সিগঞ্জে কৃষকের অর্ধেক আলু পঁচে গেছে গোলায়- জাগ্রত বিক্রমপুর ২৪


 

নিজস্ব প্রতিনিধি - 

*মোট আলু আবাদ ৩৭ হাজার হেক্টর

* উৎপাদন ১৩ লক্ষ মেট্রিক টন 

*মোট হিমাগার ৬৫ টি

*ধারন ক্ষমত্বা ৫ লক্ষ মেট্রিক টন


মুন্সিগঞ্জের কৃষকদের বাড়িতে বিভিন্ন গোলায় সংরক্ষণ করে রাখা আলু পঁচে গেছে। আলু উত্তোলনের পর লাভতো দূরের কথা উৎপাদন খরচ পাওয়ার আশায় দির্ঘদিন আলু সংরক্ষণ করে রেখেছিলো কৃষক। কিন্তু দির্ঘদিন সংরক্ষন করেও উৎপাদন খরচ উঠাতে পারেনি কৃষক। তাছাড়া এখোন বাড়িতে গোলায় সংরক্ষন করা আলুতে পচঁন ধরে অনেক কৃষকের অর্ধেক অালু পচেঁ যাওয়ায় উৎপাদন খরচও এখোন দ্বিগুণ হয়েছে। ফলে কৃষকদের মধ্যে চরম হতাশা দেখা দিয়েছে।


মুন্সিগঞ্জ জেলায় প্রধান উৎপাদনকারী ফসল আলু। আলু উৎপাদনে দেশের শীর্ষস্থানে রয়েছে 

জেলাটি। ফেব্রুয়ারি মাসের শেষ সপ্তাহে আলু উত্তোলন শুরু হয়। সে সময় হতে আলুর ন্যায্যমূল্য না পাওয়ায় বিক্রি থেকে মজুদে বেশি আগ্রহী হয়ে উঠে কৃষকরা। এবার প্রতি কেজিতে আলুর উৎপাদন খরচ ১২ থেকে ১৩ টাকা আর উত্তোলন মৌসুমে বাজারে আলু বিক্রি হয়েছে ১১ থেকে ১২ টাকায়। এরপর আরো দাম কমতে থাকে চলে আসে ১০ থেকে ১১ টাকায়। এখোন আবার দাম কিছুটা বৃদ্ধি পেয়ে গোলার আলু ১২ থেকে সাড়ে ১২ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।



আলু উত্তোলনের পর লাভতে দূরের কথা উৎপাদন খরচ পাওয়ার আশায় আলু তুলে হিমাগারের পাশাপশি জমিতে এবং বাড়ির গোলাঘরে সংরক্ষন করে রাখে কৃষক। কিন্তু ঝড় বৃস্টির কারনে আলু সংরক্ষন করে রাখা জমিতে পানি জমতে শুরু করায় বাধ্য হয়ে লোকসান দিয়েই বিক্রি করে কৃষক। বাড়িতে সংরক্ষন করে রাখা আলু বাড়তি দাম পাওয়ার অাশায় সংরক্ষন করে রাখছিলো। এখোন তা কৃষকের গলায় ফাঁস হয়ে দাড়িয়েছে। যেভাবে পচঁন শুরু হয়েছে এখোন যদি বিক্রি করা সম্ভব না হয় তাহলে কিছুদিন পরে গোলায় ভালো আলুর অস্তিত্ব খুজেঁ পাওয়া যাবেনা। তখন পঁচা আলু শ্রমিক নিয়ে গোলাঘর হতে পরিস্কার করতে হবে। অন্যথায় আলু পঁচার গন্ধে গোলাঘরের আশেপাশে বসবাস করা দায় হয়ে দাড়াবে।


এ ব্যাপারে টঙ্গিবাড়ী উপজেলার চাঠাতি পাড়া গ্রামের কৃষক সাত্তার বেপারী জানান, হিমাগারের পাশাপশি বাড়িতেও আলু সংরক্ষন করেছিলাম। কিছুদিন আগেও আলু কিনার পাইকার পাইনি। এখোন কিছু পাইকার আসছে। কিন্তু বৃস্টির কারনে রাস্তাঘাট ভিজে যাওয়ায় পাইকাররা বাড়ি হতে আলু গাড়িতে করে নিতে পারছেনা। আলুতে যেভাবে পচঁন ধরছে দ্রুত বিক্রি করতে না পারলে আলু সব পঁচে নস্ট হয়ে যাবে। সে আরো জানায় এখোন ১২ থেকে সাড়ে ১২টাকা কেজি দরে আলু বিক্রি হচ্ছে।


একই উপজেলার মান্দ্রা গ্রামের চাষি তমিজ খান জানান, আমি একটি গোলায় ৪শত মন আলু রাখছিলাম। পরে আলু কিনার পাইকার না পেয়ে আমার এলাকার এক পাইকারকে বললাম আমার আলুগুলো নিয়ে যাও। আড়ৎতে বিক্রি করে টাকা দিও। পরে সেই পাইকার আলু মেপে অর্ধেক আলু ভালো পাইছে আর অর্ধেক পচেঁ যাওয়ায় ফেলাইয়া দিছে।



এ ব্যপারে কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের মুন্সিগঞ্জের উপ-পরিচারক মো. খোরশীদ আলম বলেন, আমরা বাড়িতে গোলাঘরে কৃষককে দেড় ফুট লেয়ার (উঁচু) করে আলু সংরক্ষন করার পরমর্শ দিয়ে থাকি। কিন্তু কৃসকদের পর্যাপ্ত গোলাঘর না থাকায় কৃষক মূলত ৪/৫ ফিট উঁচু করে আলু সংরক্ষন করে থাকে। আলু সংরক্ষন করার পর নিয়ম হলো আলুগুলো মাঝে মাঝে নেড়ে বেছে পঁচা আলুগুলো ফেলে দিতে হবে। কিন্তু কৃষকরা ৪/৫ ফিট উঁচু করে আলু সংরক্ষন করায় সে আলু নেড়ে বাছাই করা সম্ভব হয়না। এতে একটা আলু পঁচলে তার পাশের আলুটিতে সেই পঁচনশীল অংশ লাগার সাথে সাথে সেই আলুটিতেও পঁচন সৃস্টি হয়। আর এ কারনেই কৃষকের গোলায় সংরক্ষন করে রাখা আলুতে ব্যাপক পচঁনের সৃস্টি হয়। সে আরো জানায় এ বছর মুন্সিগঞ্জে ৩৭ হাজার হেক্টর জমিতে ১৩ লক্ষ মেট্রিক টন আলু উৎপাদন হয়েছে। এর মধ্যে মুন্সিগঞ্জে বর্তমানে ৬৫টি হিমাগার সচল রয়েছে। এগুলোর ধারন ক্ষমত্বা ৫ লক্ষ মেট্টিক টন। বাকি আলু কৃষক জমিতে বাড়িতে সংরক্ষন ও জমি হতে বিক্রি করেছে।

Post a Comment

0 Comments